বাংলাদেশী ছেলের রোবট আবিষ্কার; কাজ করতে সক্ষম হোটেলে
বাংলাদেশের ছেলে আবিষ্কার করল রোবট। যেটা কি'না কাজ করতে পারে হোটেল বয় হিসেবে। বয়ে নিয়ে যেতে পারে ছোট-ছোট বিভিন্ন জিনিস। খাবার, পানি ইত্যাদি সরবরাহ করতে সক্ষম এই রোবট। তাছাড়া কথা বলতেও পারে রোবটটি। প্রশ্ন করলেও উত্তর দিতে সক্ষম এই রোবটটি যার নাম দেওয়া হয়েছে 'চিট্টি'।
সব সময় আবিষ্কার এর নেশায় ছুটে বেড়ায় মানুষ। বিভিন্ন দেশে দিনে দিনে বানানো হচ্ছে বিভিন্ন রোবট। অত্যাধুনিক সেসব রোবট করতে পারে নানা বিধ কাজ। তাহলে আমাদের বাংলার মানুষ কেন তা করতে পারবে না? সম্প্রতি দেখা মিলল এমনই এক তরুন রোবট উদ্ভাবকের।
নাম আহসান হাবীব। বাসা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুসভান্ডার ইউনিয়নের মানিক বাজার এলাকায়। স্থানীয় একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত তিনি। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে পরিচিত করার জন্যই তার এই রোবট তৈরির প্রচেষ্টা। তরুন এই উদ্ভাবক বলেন, '' এই ধারণাটা আসে আমার ২০১৭ সালে। তখন থেকেই চেষ্টা করতাম টুকটাক। বাবা মারা যাওয়ার পরে একটু থেকে গিয়েছিলাম। আর এরপর আবার ফিরে আসি আমি রোবট বানানোর কাজে। দীর্ঘদিন যাবত চেষ্টায় থালায় অবশেষে ৭ মাসের মধ্যে আমি এটি বানাতে সক্ষম হয়েছি।"
আহসান
হাবীব এর মা বলেন, " আমার ছেলে অনেক ধরনের
কাজ করতে পারে। প্লেন
বানাতে পারে, জানালা-দরজা ছাড়াই ঘর
বানাতে পারে।"
রোবটটি
বানানো প্রসঙ্গে হাবীব বলেন, ' রোবটটি বানাতে আমার অনেক মেধাশ্রম
লেগেছে। তবে বিশেষ করে
আমি সমস্যায় পড়েছি অর্থ নিয়ে। রোবটটি
তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে আমেরিকান
সার্কিট, ইতালিয়ান সার্কিট, চাইনিজ সার্কিট এবং বাংলাদেশী সার্কিট।
এই সব রাষ্ট্রের প্রযুক্তি
ব্যবহার করে আমার কাজের
এই সফলতা।'
আহসান হাবীব জানান তার এই রোবট বানানোর আইডিয়াটা আসে বলিউডের রজনীকান্ত সিনেমা দেখে। তার রোবট সিনেমার মতই রোবট বানানোর প্রবল ইচ্ছা জাগে হাবীবের মনে। আর তার পর থেকেই শুরু করে দেন প্রচেষ্টা। রজনীকান্ত এর রোবটের মত এই রোবটটির ও নাম রাখা হয়েছে চিট্টি। এই চিট্টি কথা বলার পাশাপাশি করতে পারে কাজ ও।
বাংলাদেশের
অজপাড়া গাঁয়ে তৈরি এই রোবট
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া কোনো শিক্ষার্থীর অ্যাসাইনমেন্ট
নয়। বরং আবেগ, যত্ন
আর অধ্যবসায়ে নির্মিত হয়েছে এই রোবট যা
কি'না কাজ করতে
পারে হোটেল কিংবা রেস্টুরেন্টে।
তিন ভাই-বোন এর মধ্যে সবার ছোট এই তরুন উদ্ভাবক আহসান হাবীব। ইউটিউবে ভিডিও দেখে মাত্র ৭ মাসেই বানিয়ে ফেলেছেন রোবটটি। নিজের করা টিউশনি আর অন্যদের কাছ থেকে নেওয়া সাহায্য দিয়েই সাফল্যের দিকে ছুটছেন স্বপ্নবাজ এই তরুন। মায়ের দেওয়া সাহস আর দোয়া নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা তার অনেক দূর পর্যন্ত। পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা পেলে আরো বড় কিছু করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিতে চান তিনি।
সবশেষে তরুন উদ্ভাবক আহসান হাবীব জানান, ' এই রোবটটি তৈরি করতে পরিশ্রমের পাশাপাশি আমার অনেক টাকার প্রয়োজন পড়েছে। যা আমার পরিবারের পক্ষে যোগান দেওয়া নিতান্তই অসম্ভব। আমার বিশেষ অনুরোধ আমাকে যেন আর্থিক ভাবে সহায়তা করা হয়। যাতে করে আমি আমার কাজকে আরো ভালভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। আর আমার দেশকে আরো ভাল কিছু দিতে পারি।'
আহসান হাবীবের বানানো এই রোবটটি দেখতে তার আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী আর বন্ধু-বান্ধবরা আসছেন ছূটে। ভীড় জমাচ্ছেন প্রতিদিন তার বাড়িতে। তার এমন আবিষ্কারে তারাও অনেক আনন্দিত ও গর্বিত।
কোন মন্তব্য নেই