ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র- উত্তেজিত রাশিয়া
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখন চরমে। আর তাদের এই যুদ্ধে প্রথম থেকেই নাড়া চাড়া দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এবার শোনা গেল আরেক কথা। ইউক্রেনকে দীর্ঘ দুরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করবে যুক্তরাষ্ট্র। যাতে করে ইউক্রেন রাশিয়াকে দমাতে পারে।
ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র |
সামরিক
সহযোগিতার অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে
"এম ওয়ান ফোরটি টু"
হাই কোয়ালিটি সম্পন্ন রকেট ব্যবস্থা বা
হিমার্স পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্লেষকদের মতে, চলমান যুদ্ধে
এই রকেট ব্যবস্থা বা
হিমার্স গেম চেঞ্জার হিসেবে
কাজ করবে। এই হিমার্স ব্যবহার
করে রাশিয়াকে বেশ দমিয়ে দিতে
পারবে ইউক্রেন। আর এখবর শোনা
মাত্র যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া এমন সিদ্ধান্তের তীব্র
নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে
রাশিয়া সরকার। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভিলাদিমির পুতিন বলছেন, এই হিমার্স যুদ্ধে
সরবরাহের মধ্য দিয়ে আগুনে
ঘি ঢালছে যুক্তরাষ্ট্র।
হিমার্স কি? কেন এত শক্তিশালী?
গত ১ জুন ইউক্রেনকে
১১ তম দফায় সাহায্য
করার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট
জো বাইডেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন,
ইউক্রেনকে নতুন করে সামরিক
সহায়তা দেওয়া হবে। সেখানে থাকছে
৭০ কোটি মার্কিন ডলারের
অস্ত্র সহায়তা । যার মধ্যে থাকবে
হেলিকপ্টার, ট্যাংক, বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ইত্যাদির মত সব সামরিক
সহায়তা। আর সবচেয়ে আকর্ষণীয়
সহায়তা হিসেবে থাকছে হিমার্স বা দীর্ঘ দুরত্বের
ক্ষেপণাস্ত্র।
অত্যাধুনিক
প্রযুক্তির হালকা রকেট লঞ্চার হল
হিমার্স। যেটি অনেক দুরের
লক্ষ্য বস্তুতে খুব সহজেই আঘাত
হানতে পারে। যার মোট ব্যাস
হল ৮০ কিলোমিটার। হিমার্স
এর প্রতি ইউনিটে থাকে ৬টি করে
জিপিএস রকেট। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন ১বার নিক্ষেপের পরে
আবার প্রায় ১ মিনিটের মধ্যেই
অল্প কয়েকজন মিলে লোড করা
সম্ভব এই রকেটটি। ইউক্রেনের
কাছে এখন বর্তমানে যেসব
রকেট গুলো আছে এই
রকেটটি তার চেয়ে অনেক
গুনে বেশি নির্ভরযোগ্য।
ইউক্রেনের
পুর্বাঞ্চলে ঢুকে পড়েছে রুশ
বাহিনি। তাদের ঠেকাতে অনেক দিন ধরে
বড় বড় সব অস্ত্র
আর অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তি চেয়ে
আসছিল ইউক্রেনের সেনারা। কারণ রুশ বাহিনি
অনেক দূর থেকে প্রায়
৭০ কিলোমিটার দূর থেকে ইউক্রেনের
সেনাদের উপর চালাচ্ছে হামলা।
কারণ তাদের কাছে আছে অত্যাধুনিক
প্রযুক্তি। কিন্তু ইউক্রেনের তা নেই। আর তাই রুশ বাহিনিকে প্রতিহত
করতে নতুন এই প্রযুক্তি
হিমার্স পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র।
বিশেষজ্ঞদের
মতে, রুশ বাহিনির কাছে
যত অত্যাধুনিক অস্ত্র আর ক্ষেপণাস্ত্র আছে,
তার থেকেও অত্যাধুনিক হল এই হিমার্স
ক্ষেপণাস্ত্র। এর ব্যবহারের ফলে
রুশ বাহিনি হয়তো বা টিকতে
পারবে না ইউক্রেন বাহিনির
সামনে। তাই এটিকে একপ্রকার
গেম চেঞ্জার বলা যেতে পারে।
লড়াইয়ে টিকে থাকতে যুক্তরাষ্ট্রের
পাঠানো এই সব সরঞ্জাম
গুলো খুব বড় ভূমিকা
রাখবে ইউক্রেন এর জন্য।
তাহলে প্রশ্ন হল, এতদিন কেন ইউক্রেনকে এই ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাইনি যুক্তরাষ্ট্র?
কারণ
হল, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র
দিলে তা সীমান্তে ব্যবহারের
ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারত।এতদিন এই
বিবেচনা করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র।
কারণ সীমান্তের খুব কাছ থেকে
এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করলে রাশিয়ার বিভিন্ন
লক্ষ্য বস্তুতে আঘাত করবে এই
শঙ্কায় এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসন
এই প্রযুক্তি দেয় নি ইউক্রেনকে।
তবে এবার দিচ্ছে ঠিকই,
কিন্তু শর্ত হল ইউক্রেন
রাশিয়ার ভুখন্ডে ব্যবহার করতে পারবে না
এই প্রযুক্তি। এই শর্ত মেনে
নিয়েছে ইউক্রেন এবং তার পরে
পাঠানো হচ্ছে এই প্রযুক্তি। এটি
ইউক্রেন ব্যবহার করতে পারবে শুধু
তাদের নিজ দেশের সীমানায়
যাতে রুশ বাহিনিকে রুখতে
পারে আর অবশেষে পুতিন
সরকারকে যুদ্ধ বন্ধ করিয়ে আলোচনার
টেবিলে বসাতে পারে। এটাই হল মূল
লক্ষ্য।
ইউক্রেনের
রাষ্ট্রপতি ভোলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তারা রাশিয়ার কোনো
ক্ষতি করতে চায় ন
এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে। শুধু নিজ দেশের
রক্ষার্থেই তারা ব্যবহার করবে
এটি।
এদিকে
ইউক্রেনকে এত এত সাহায্য
সহযোগিতা পাঠানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া
হুশিয়ারি জানিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী
বলেছেন, হিমার্স সরবরাহের কারণে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সংঘাতের ঝুঁকি বাড়ছে।
এরপর
কি হতে চলেছে? হিমার্স
এর শক্তি ব্যবহার করে কি ইউক্রেন
সেনারা পারবে রুশ সেনাদের প্রতিহত
করতে?
আরো পড়ুনঃ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোর বিস্ফোরণে ভয়াবহ আগুন
চলছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনাল নির্মাণ কাজ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান
কোন মন্তব্য নেই