ডিবিসি নিউজ চ্যানেলের সংবাদকর্মীকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা

স্বভাবে খুবই শান্ত শিষ্ট ছিলেন ডিবিসি নিউজ চ্যানেলের সিনিয়র প্রডাকশন এক্সিকিউটিভ মোঃ আব্দুল বারি। গতকাল রাত ৮টা নাগাদ বের হন তার বাসা থেকে। এরপর ফেরেননি আর। রাত পেরিয়ে দিন গড়ালে আজ তার গলা কাটা মরদেহ পাওয়া গেছে হাতিরঝিলের একটি লেকের পাশে। 

 

ডিবিসি নিউজ চ্যানেলের সংবাদকর্মীকে গলা কেটে হত্যা

বাংলাদেশের একটি পরিচিত টিভি চ্যানেল ডিবিসি নিউজ চ্যানেল। এই টিভি চ্যানেলে সিনিয়র প্রডাকশন এক্সিকিউটিভ পদে কর্মরত ছিলেন আব্দুল বারি। ঢাকার মহাখালীর ওয়ারলেস গেট এলাকার ১০৯ নম্বর বাড়ির ২য় তলায় গত ৫ মাস যাবত থেকে আসছিলেন তিনি। সিসি টিভির ফুটেজে পুলিশ দেখতে পেয়েছে গতকাল ৭ই জুন, মঙ্গলবার রাত ৮ টা বেজে ৪৯ মিনিটে বাসা ছেড়ে বেরিয়ে যান মোঃ আব্দুল বারি। মঙ্গলবার ছিল তার সাপ্তাহিক ছুটি। আর বুধবারে তার সন্ধ্যায় অফিস করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠল না। দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নির্মম মৃত্যু হল তার। সারা রাতভর তার রক্তাক্ত নিথর মরদেহ পড়ে ছিল হাতিরঝিলের লেক পাড়ে।

 

তিনি রুম শেয়ার করে থাকতেন তার অন্য দুই রুমমেট শাকিল হোসেন এবং রাব্বি রহমান সঙ্গে। তারা জানালেন তাদের মনোভাব। বলেছেন, স্বভাবে খুবই শান্ত ছিল আব্দুল বারি। কারো সাথে তেমন মিশত না সে। খুব বেশি প্রয়োজন না পড়লে কথাও বলতো না কারো সাথে। অবসরে হাতের স্মার্টফোন দিয়েই পেরিয়ে যেত সময়। পুলিশদের প্রশ্নের জবাবে তার রুমমেট রাব্বি রহমান বলেন, আমি এখানে এসেছি গত এপ্রিলে। এর মধ্যে কেউ কোনো দিন আব্দুল বারির কাছে আসেনি দেখা করতে। এমনকি আমার আসা পর্যন্ত প্রায় এই দুই মাসের মধ্যে উনি ফোনে কথা বলেছেন মাত্র ৩ দিন। অফিস থেকে বাসা আর বাসা থেকে অফিস এই ছিল তার প্রতিদিনের রুটিন। বাসায় এসে খাওয়া-দাওয়ার পর উনি ফোন ব্যবহার করতেন বিশেষ করে মুভি দেখতেন। 

 

অন্য আরেক রুমমেট শাকিল হোসেন জানান, আব্দুল বারির মত এমন একজন শান্ত-শিষ্ট মানুষের সঙ্গে কারো ঝামেলা হওয়া অস্বাভাবিক। এখানে ম্যাচে শুধু আমাদের দুই জনের সাথেই কথা বলতেন বেশি। বাইরের কারো সাথে কথা বলতেন না বললেই চলে। 

 

পুলিশ খোজ নিচ্ছে পাশের রুমের ব্যক্তিদের। পাশের রুমে থাকত দুই জন। তাদের একজন মঙ্গলবারে বেরিয়ে গেছে শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশ্যে আর অন্য জন রাতে এক বন্ধুকে নিয়ে রাত্রী যাপন করেই বুধবার সকালে বেরিয়ে গেছেন বাইরে। আব্দুল বারির এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন তার রুমমেটরা।

 

হাতিরঝিল এর পাশে নিকেতন খালের পূর্ব পাশে পড়ে ছিল আব্দুল বারির মরদেহ। সকালে দুই শিশু প্রথমে দেখতে পায় তার লাশ। পরে বড়দের সহায়তায় ডেনে আনা হয় পুলিশ। পুলিশ এর প্রাথমিক ধারণা এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে সুপরিকল্পিত ভাবে। কারণ, এমন নির্জন জায়গায় অত রাতে কেউ শুধু শুধু কেন আসতে যাবে। পুলিশ ধারণা করছে, তাকে ডেকে নিয়ে সুপরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।  

 

এবিষয়ে ডিবিসি নিউজ এর সি ই ও এবং প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, এরকম দূর্ঘটনা আমাদের জন্য শকিং। কারণ, উনি একেবারেই স্বল্পভাষী একজন মানুষ ছিলেন। নিরবে তার কাজ করতেন। প্রায় ২ বছরের কাছাকাছি উনি আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন। আমার জানা মতে অফিসেও উনি কারো সাথে উচ্চ স্বরে কথা বলতেন না।আমরা দোষীদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি চাই।  

 

আব্দুল বারির মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। তার দাফন হবে তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে।

  👉আমাদের এই ফেসবুক পেজটি লাইক ও ফলো করুনঃ  𝐀𝐟𝐭𝐞𝐫𝐋𝐢𝐟𝐞⌛পরকাল

আরো পড়ুনঃ

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) কে অবমাননা করায় ক্ষুব্ধ মুসলিম বিশ্ব 

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে কর্মহারা হচ্ছেন হাজারো মানুষ; মাওয়া ঘাট

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোর বিস্ফোরণে ভয়াবহ আগুন