Header Ads

Header ADS

সীতাকুণ্ড ট্রাজেডি; চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অগ্নি সংযোগের সর্বশেষ পরিস্থিতি

গত ৪ই জুন শনিবার রাত প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ প্রচন্ড একটা শব্দে কেপে ওঠে পুরো সীতাকুণ্ড এলাকা। চারিদিকে পড়ে যায় হাহাকার। বিস্ফোরণে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে বিভিন্ন জনের দেহ। যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি। 

 

সীতাকুণ্ড ট্রাজেডি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে  অগ্নি সংযোগের  সর্বশেষ পরিস্থিতি

রাত যত গড়াতে থাকে তত বাড়তে থাকে আগুনের খেল। একে একে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের মোট ২৫টি ইউনিট। নিজের জীবন বাজি রেখে কাজ করে তারা। যার জন্য হয়েছেন ৯ জন নিহত। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি আরো কাজ করে পুলিশ সদস্যরা, সেনাবাহিনীর সদস্যরা, র‍্যাব  বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 

 

অদম্য মাত্রার সাহস আর দৃঢ় মনোবল নিয়ে কাজ করেছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এমন দেখা গেছে, নিজের সহকর্মীর লাশ টেনে নিয়ে পাশে রেখে আবারো কাজে লাগছেন তারা। যেন এক মর্মান্তিক দৃশ্য। সারা দিনভর কাজ করেও যেন ক্লান্ত হয়নি তারা। সবার আগে সাহসিকতার প্রশংসা করতে হয় তাদের।

 

কেন এই অগ্নিকাণ্ডঃ

 

যদিও এখনো কোনো স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারনা করা হচ্ছে প্রাথমিক ভাবে বড় একটি কন্টেইনারে আগুন লাগে। যার ভিতরে ছিল দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ। কেউ বুঝে উঠতে পারেনি যে, এটির কাছে গেলে বিস্ফোরণ হতে পাতে। তাই ডিপোর ভিতরেই থাকা আগুন নিভানোর উপকরণ দিয়ে আগুন নিভানোর চেষ্টা করে শ্রমিকরা। যদিও তখন তাদের সাথে ছিল ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অবশ্য জিজ্ঞাস করেছিল যে সেখানে কোনো কেমিক্যাল বা ওই জাতীয় কিছু আছে কিনা। স্থানীয় শ্রমিকরা তাদের তথ্য দেয় যে সেখানে কোনো কেমিক্যাল নেয় । তাই নিশ্চিত হয়েই কাজ করছিল ফায়ার সারভিস। হঠাৎ করে প্রচন্ড বিকট একটা শব্দ করে ফেটে পড়ে পুরো কন্টেইনারটি। আর এই বিস্ফোরণের কারণেই প্রাণ হারান অনেকেই। যারা কন্টেইনারটির একেবারে নিকটে ছিল তাদের বেশিরভাগই মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসময় ফেসবুক লাইভে একটি ছেলে ৪০ মিনিট লাইভে ঘটনাটি দেখাচ্ছিল। প্রথম কন্টেইনারটি বিস্ফোরিত হওয়ার পর মারাত্মক আহত হয় সে এবং অবশেষে মারা যায়। প্রথম এই কন্টেইনারটি বিস্ফোরিত হওয়ার পরপরই আগুন লাগতে শুরু করে অন্যান্য ছোট-বড় সকল কন্টেইনারে। এভাবেই সূচনা ঘটে এই অগ্নিকাণ্ডের। 

 

সীতাকুণ্ড অগ্নিকান্ডে হতাহতঃ

 

সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে আহত হয়েছেন কয়েক শত মানুষ। আর নিহতের সংখ্যা দফায় দফায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ এ। উল্লেখ্য, এখানে নিহতের মধ্যে ১০ জনই হলেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্য। আর হতাহতের মধ্যে আছেন ডিপোর শ্রমিকরা ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশ সদস্যরা। উল্লেখ্য, কুমিরা ফায়ার স্টেশনের ১৫ জন ফায়ার ফাইটার এর মধ্যে  ১৪ জনই আহত হয়েছেন । আর সীতাকুন্ড ফায়ার স্টেশনের সদস্যরাও অনেকে হয়েছেন আহত। এই দুই ফায়ার স্টেশনের সদস্যদের মধ্যে মারা গেছেন মোট ১০ জন। চিকিৎসার জন্য প্রত্যেককে নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে। জরুরী ভিত্তিতে কাউকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ঢাকার উন্নত সব হাসপাতালে। আহতদের মধ্যে কারো হাত উড়ে গেছে আবার কারো কারো পা উড়ে গেছে। এভাবেই করুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা।  ইতিমধ্যে সুস্থ্য হয়ে ঘরে ফিরেছেন অনেকেই। 

 

 

সীতাকুণ্ড অগ্নিকান্ড বর্তমান পরিস্থিতিঃ

 

টানা ১ সপ্তাহ অগ্নিযুদ্ধের পর বীর ফায়ার ফাইটাররা নিয়ন্ত্রনে এনেছে আগুন। এখন ডিপো থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে পরিত্যক্ত সব মালামাল আর পুড়ে ছায় হয়ে যাওয়া কন্টেইনার গুলো। প্রথম বিস্ফোরিত হওয়া সেই কন্টেইনার এর কাছে গেলে দেখা যায় অবস্থা কতটা ভয়াবহ ছিল। বড় বড় সব কার্গো আর ট্রাক পুড়ে ছাই গেছে। ছোট-বড় গড়ে প্রায় ১ হাজারের ও বেশি কন্টেইনার পুড়ে গেছে। 

 

সীতাকুণ্ড আশপাশের একালার পরিস্থিতিঃ

 

অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্য যে, কন্টেইনার বিস্ফোরণ এর শব্দ শোনা গেছে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও। আর সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে বি এম ডিপোর স্থান থেকে কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকাতেও পড়েছে এই বিস্ফোরণ এর প্রভাব। এর প্রভাবে কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকার কিছু কিছু দালান বাড়ির দেওয়ালে ধরেছে ফাটল। ভেঙে গেছে কাচের গ্লাচের জানালা। কোনো কোনো টিনের চালের ছাদ ওয়ালা বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে এই বিস্ফোরণ এর শব্দে। কোনো কোনো বাসা বাড়ির টিভি,ফ্রিজ,ফ্যান ইত্যাদি বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকে এমন অবস্থাকে প্রথমে ভূমিকম্প বলে ভাবছিলেন। কিন্তু পরেই তাদের ভূল ভাঙে। সত্যটা তারা বুঝতেই পারে। ওছাড়াও বিস্ফোরণ হওয়ার কারণে কন্টেইনারের বিভিন্ন টুকরো উড়ে এসে পড়ে লোকালয়ে। এতে লোকজন এখন আছে আতঙ্কে। এলাকাবাসীর দাবি, তারা শুধু বিকট একটা আওয়াজ শুনেছে। আর বাকিটা  তো আমাদের সবারই জানা। বিস্ফোরনের আগুন ছিটকে এসে পড়তে থাকে পাশের বিভিন্ন রাস্তার উপরে। 

 

 চিকিৎসক হাসপাতালঃ

 

আগুনে পুড়ে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে এসেছে  শত শত মানুষ। দৃশ্য কখন ভোলার নয়। হাসপাতালে তিল রাখার যেন জায়গা নেই রোগীর আনাগোনায়। বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, এক সাথে এত এত দগ্ধ রোগী এর আগে কখনো দেখেনি তারা। চারিদিকে শুধু মানুষ পোড়ারই গন্ধ। নিহতের সংখ্যা বেড়েছে দফায় দফায়। এত এত রোগীর জন্য পড়ে যায় চিকিৎসক সংকট। আর তাই সংকট মেটাতে হাসপাতালে এসেছিল বিভিন্ন ফার্মেসির মালিকরা। এসে করেছেন সাধ্য মত সাহায্য। মূমুর্ষু রোগীদের নেওয়া হয়েছে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে।  

 

সর্বশেষ

 

সবদিক মিলিয়ে হাহাকার আর আহাজারিতে মৃত্যুপুরী হয়ে উঠে সীতাকুণ্ড এলাকা। এমন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড বাংলাদেশ মনে হয় দেখেনি এর আগে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্য, পুলিশ সদস্য, ডিপোর সাধারণ কর্মীরা হয়েছেন হতাহত, নিহত। ভুলবে না বাংলাদেশ কোনো দিন এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ড। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আমিন। 


👉আমাদের এই ফেসবুক পেজটি লাইক ও ফলো করুনঃ  𝐀𝐟𝐭𝐞𝐫𝐋𝐢𝐟𝐞পরকাল


আরো পড়ুনঃ

তুরস্কের নাম বদলিয়ে নতুন নাম রাখা হল তুর্কিয়ে

এবার চীন-আমেরিকা উত্তেজিত; তাইওয়ান ইস্যুতে হতে পারে ভয়াবহ যুদ্ধ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোর বিস্ফোরণে ভয়াবহ আগুন 



২টি মন্তব্য:

  1. ইতিমধ্যে সুস্থ্য হয়ে ঘরে ফিরেছেন অনেকেই।

    উত্তরমুছুন
  2. আল্লাহ সবার সহায় হোন। আমিন।

    উত্তরমুছুন

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.