বেরিয়ে এলো কুত্তা বিরিয়ানির আসল রহস্য
'আল্লাহর দান বিরিয়ানি হাউজ-৫' নামের একটি খাবারের দোকান গত ১৫ই মে খবরের শিরোনামে চলে আসে। ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার নরসিংহপুরে অবস্থিত এই দোকানটির বিরুদ্ধে ওই দিন অভিযোগ করেন এক নারী ভোক্তা। আর সেই অভিযোগেই ঘটে যায় তুলকালাম কান্ড। এই নারী ভোক্তা অভিযোগ করেন এই দোকানে নাকি কুকুরের মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করা হয়। মূহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় ঘটনাটি।
বেরিয়ে এলো কুত্তা বিরিয়ানির আসল রহস্য
ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর জনরসের মুখে পড়ে যান দোকান মালিক ও দোকান কর্মীরা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছিল এই সংবাদ। ঘটনা শিমুলিয়া পুলিশের কানে পৌঁছালে চলে আসে পুলিশ। পুলিশ এসে প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদের পর দোকানের সেই বিরিয়ানির মাংসের নমুনা নিয়ে যায় তাদের সাথে করে এবং ল্যাবে পাঠানো হয় পরিক্ষার জন্য। সেই সাথে দোকানের এক কর্মচারীকেও হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায় থানায়। সেই থেকে এই শাখার অন্যান্য সব দোকান বন্ধ হয়ে যায়।
এই ঘটনার ২৬ দিন পর বেরিয়ে আসল আসল তথ্য। ল্যাবে করা সেই মাংসের নমুনা পরিক্ষায় মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ল্যাব অপারেটররা জানান এই মাংসের নমুনায় কোনো প্রকার কুকুরের মাংস পাওয়া যায়নি। পুলিশ ও সেই তথ্যের ভিত্তিতে জানিয়ে দেয় সেদিনের বিরিয়ানির মাংসে কোনো প্রকার কুকুরের মাংস ছিল না। ল্যাব অপারেটর প্রধান গোলাম আজম বিজ্ঞানী জানান, আমাদের কাছে মাংসের নমুনা পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে এই মাংস কুকুরের কি'না। আমরা আমাদের সব রকম পরিক্ষা চালিয়ে দেখেছি এটা কোনো ভাবেই কুকুরের মাংস হতে পারে না। এটা হয় গরু না হয় ছাগল। না হলে মহিষের মাংস হবে। কিন্তু কুকুরের নয়।
এদিকে দোকান মালিক বলছেন এটি কোনো একটি গোষ্ঠীর চক্রান্ত হতে পারে। এটি করা হয়েছে তার ব্যবসার ক্ষতির উদ্দেশ্যে। এমন অপপ্রচার এর কারণে তার প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দোকান মালিক বলেন, বিগত এই কয়েকদিনে আমি প্রায় ১০ লক্ষ টাকার লোকসান গুনেছি। আমার দুইটা শাখা ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করেন ৫ নম্বর এই শাখাটা খুলছি। বেচা-কেনা খুবই খারাপ। আমি এই এলাকায় অত্যন্ত সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছি। কেউ বলতে পারবেনা যে আমি কখনো এমন জঘন্যতম কাজ করেছি। তারপরও আমার বিরুদ্ধে এমন একটা মিথ্যা মামলা দিছে। কিন্তু এখন তো পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে ফলাফল পাওয়া গেছে। রিপোর্ট তো আমার পক্ষেই আছে। এখন আমি এর যথাযথ বিচার চাই।
এই দোকানের কয়েকজন নিয়মিত কাস্টমার দাবি করেন যে, এখানে বরাবরই অতি যত্ন করে খাবার তৈরি ও পরিবেশন করানো হয়। তারাও ভাবেন কুকুরের মাংস দিয়ে বিরিয়ানি বানানোর খবর মিথ্যা ও বানোয়াট ছিল। পরিক্ষা চালানোর পর ঘটনার সত্যতা যাচাইরের জন্য তারাও এখন সন্তুষ্টতা প্রকাশ করছেন।
ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর প্রায় ১ মাস তাদের এই ব্যবসার প্রায় সব গুলো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে দোকানের কর্মচারীদের পাওনা দিয়ে বন্ধ হয়ে যায় দোকান। এমনকি কুকুরের মাংস দিয়ে বিরিয়ানি বানানোর মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তির পরও প্রথম দিনে তেমন ক্রেতা নেই দোকানে। তাই বেচা-কেনাও খুবই কম হচ্ছে বলে দাবি করেন দোকান মালিক ও দোকান কর্মচারীরা।
এই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার দাবি জানান দোকান মালিক, দোকান কর্মচারী ও নিয়মিত কাস্টমার সহ স্থানীরা। ক্ষতিপূরণ এর পাশাপাশি তারা চান দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি।
আরো পড়ুনঃ
আগে থেকেই কবর খুড়ে রেখেছিল ইউক্রেন; ইউক্রেন বনাম রাশিয়া
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হলেও বন্ধ হবে না ফেরি চলাচল; বিআইডব্লিউটিসি
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের কারণে ২৫ জুনের পরিক্ষা হবে ২৪ জুন ; এসএসসি পরীক্ষা ২০২২
এ একটা কাজ হলো এ🐸
উত্তরমুছুন